Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪৩০ ভিড় বেড়েছে জাতীয় পিঠা উৎসবের: বাকি আর ৩ দিন বিপুল সমাগমে জমজমাট বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পিঠা উৎসব; লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও গ্রাম- বাংলার বাহারি পিঠার স্বাদ- গন্ধে মাতোয়ারা রাজধানীবাসী।


প্রকাশন তারিখ : 2024-02-08

জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪৩০

ভিড় বেড়েছে জাতীয় পিঠা উৎসবের: বাকি আর ৩ দিন

বিপুল সমাগমে জমজমাট বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পিঠা উৎসব; লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও গ্রাম- বাংলার বাহারি পিঠার স্বাদ- গন্ধে মাতোয়ারা রাজধানীবাসী।                       

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় গত ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় পিঠা উৎসব। দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় একযোগে উদ্বোধনের মাধ্যমে চলমান এ মেলায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে রাজধানী এবং জেলাগুলোতে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকা এবং জেলা উপজেলা থেকে আগত পিঠা শিল্পীরাও এবারের মেলায় অংশ নিয়েছেন। প্রতিদিন বাহারি স্বাদের পিঠা আর লোক সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুগ্ধ আগত পিঠাপ্রেমী ও দর্শনার্থীরা। একদিকে জাতীয় চিত্রশালার সামনে নাগরদোলায় শিশুদের বিনোদনের উপকরণ অন্যদিকে বড়দের জন্য লোকসাংস্কৃতিক পরিবেশনা, সবমিলিয়ে যেন গ্রামীণ মেলা বসেছে এখানে। হাজারো ব্যস্ততার ভিড়ে কর্মজীবী নগরবাসী পরিবার পরিজন নিয়ে উপভোগ করছেন পিঠা উৎসব।

পিঠা তৈরীর ঐতিহ্য পরম্পরা: বিনামূল্যের স্টলে মুল পিঠাশিল্পীরা

এবারের উৎসবে অবাণিজ্যিক মুল পিঠাশিল্পীদের তুলে আনতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ,বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। পুরো একাডেমি প্রাঙ্গণে বসেছে ৫০ টি স্টল । এর মধ্যে বিনামূল্যে ৩০ টি স্টল দেয়া হয়েছে ১৮০ জন পিঠা শিল্পীকে। যাদের বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৩/৪ দিন মেয়াদ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তারা নির্ধারিত ৪ দিনের বেশি স্টলে অংশ নিতে পারছেন না। মুলত পিঠাশিল্পীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এই সুযোগ দেয়া হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আগত এসব পিঠা শিল্পীদের বিনামূল্যে স্টলে পিঠা তৈরী ও বিক্রির সুযোগ দেয়া হয়েছে। যারা বাণিজ্যিক নন, কেবল পারিবারিক ঐতিহ্যগতভাবে পিঠা তৈরী করেন, তাদের মাধ্যমে আদি ও ঐতিহ্য পরম্পরার পিঠার ভিন্নতা তুলে ধরতেই প্রথম বারের মতো এই আয়োজনের ক্ষেত্র তৈরী করে দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।

এবারের পিঠা মেলায় অংশগ্রহণকারী পিঠাশিল্পীদের মূল্যায়ন করতে প্রতিদিনই স্টল পর্যবেক্ষন এবং পিঠার স্বাদ বিচার করছেন বিচারক কমিটি। পিঠার গুণমান, আদি ধরণ এবং স্বাদ বিবেচনায় ১৮০ জন পিঠাশিল্পীর মধ্যে ৩ জনকে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট এবং সনদপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়া প্রত্যেক অংশগ্রহণ কারী পিঠাশিল্পীই পাচ্ছেন সনদপত্র। একাডেমিতে খানিক আলাদা অংশে বাকি ২০ টি প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক অর্থে পিঠার স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যারা বাণিজ্যিকভাবে পিঠা তৈরী এবং বিক্রির সাথে যুক্ত রয়েছে।

৮ম দিনেও উপচে পড়া ভিড় জাতীয় পিঠা উৎসবে

জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪৩০ সপ্তম দিনেও জমজমাট। চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত, বাকি আর মাত্র ৩ দিন। আজ ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ দুপুর থেকেই জমে ওঠে পিঠা উৎসব।

পার্বত্য এলাকা থেকে শুরু করে নগরের বিভিন্ন ধরনের আদি পিঠা স্থান পেয়েছে স্টলগুলোতে। বিবিখানা, জামাই আদর, ডিম সুন্দরী, ক্ষ্যাতাপুরী, ক্ষীর পাটিসাপটা, নারিকেল গুড়ের পুলিপিঠা, খেজুর গুড়ের পিঠা, সাংগ্রাই মুং, আদিবাসীদের কলা পাতার পিঠা, কালো বিন্নি চালের পায়েস, চালের ছোট রুটির সাথে পুর সবজি, ছিটা পিঠাসহ নানা ধরনের আদি পিঠার পসরা নিয়ে বসেছেন শিল্পীরা।

অন্যদিকে পরিবেশিত হয়েছে লোক- সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শীতের সন্ধ্যায় গরম গরম ধোয়া ওঠা পিঠার সাথে লোক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সঙ্গীত, নৃত্য উপভোগ করেন আগত পিঠাপ্রেমী ও দর্শকরা।

আজ লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনার শুরুতেই অনুষ্ঠিত হয় এথিক এর নাটক। এরপর সমবেত নৃত্য ‘মহতের পদাবলী’ পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বাউল দল । এরপর আবার সমবেত নৃত্য ‘জলে না যাইয়ো’ পরিবেশন করে জাগো আর্ট সেন্টার, পরিচালনায় ছিলেন বেলায়েত হোসেন। এরপর কবি- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর কবিতা ‘হাট ও অঞ্জনা নদ ’

আবৃত্তি করেন রূপা চক্রবর্তী। একক সংগীত জাহিদ আহমেদের গান ‘তোমার ঘরে বাস করে কারা’ পরিবেশন করেন নাবিদ রহমান তূর্য্ (শিশু); একক সংগীত সৈয়দ শাহনুরের গান ‘বন্ধু তোর লাইগারে’ পরিবেশন করেন পূজা দাস তান্নি । এরপর একক সংগীত যশোরের আঞ্চলিক গান‘খিলে ধুয়ে দেরে বউ’ পরিবেশন করেন মোঃ শাহিন এবং একক সংগীত পরিবেশন করেন রীতা মন্ডল।

আবার সমবেত নৃত্য ‘কনক চাপা ধান’ পরিবেশন করে নৃত্যসুর নৃত্যদল. পরিচালনায় ছিলেন সেলিনা হক । এরপর সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা আবৃত্তি করেন অনন্যা লাবনী পুতুল। এরপর একক সংগীত শাহ আব্দুল করিম এর গান ‘বসন্ত বাতাসে সইগো’ পরিবেশন করেন শ্রাবন্তী শ্রেয়া(শিশু)। এরপর দূর্বীণ শাহ এর গান ‘মারিয়া ভূজঙ্গ তীর’ পরিবেশন করেন মোঃ রিয়াজ হাছান। জসীমউদ্দিনের গান ‘আমার হাড় কালা করলামরে’ পরিবেশন করেন মোসা: নিপা আক্তার। এরপর আবার নৃত্য পরিচালক বেলায়েত হোসেনের পরিচালনায় পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য। নৃত্য পরিবেশন করে জাগো আর্ট সেন্টার । এরপর আবার একক সংগীত। প্রচলিত গান ‘সাধের লাউ’ পরিবেশন করেন গোধূলী পাল। এছাড়াও একক সংগীত পরিবেশন করেন নবীন কিশোর গৌতম, আলম আরা মিনু এবং ফরিদা পারভীন।

সবশেষ পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য ‘কালা মেঘের’ পরিবেশন করে নৃত্যসুর নৃত্যদল। নৃত্য পরিচালনা করেন সেলিনা হক । অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: আলমগীর ও আব্দুল্লাহ বিপ্লব।

জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪৩০, ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে প্রতিদিন বিকাল ৩ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।