বিপুল দর্শক উপস্থিতিতে বান্দরবানে অনুষ্ঠিত হলো
মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য 'মাচয়ইং'
বান্দরবানের সদর উপজেলার ২ নং কুহালং ইউনিয়ন, ৬ নং ওয়ার্ড-এর থোয়াইংগা পাড়ায় গত শনিবার রাত ৯.০০ টা থেকে রাতব্যাপী মঞ্চায়ন হয় মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতির লোকনাট্য ‘মাচয়ইং’ জ্যাত্। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেল এর ব্যবস্থাপনায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এর সহযোগিতায় লোকনাট্য মঞ্চায়ন করে রুমা উপজেলার খানা পাড়া জ্যাত্ দল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (সচিব পদমর্যাদা) ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান সেনা রিজিয়ন, ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড ও রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান, এএফডব্লিউসি, পিএসসি; বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বান্দরবান জেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক থানজামা লুসাই। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রশিক্ষণ বিভাগের উপপরিচালক এস এম শামীম আকতার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা বলেন, “পাহাড়ী এবং বাঙালীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় একসাথে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এ ধরণের উদ্যোগকে তিনি সাধুবাদ জানান এবং দুর্গম এলাকায় এ ধরণের সাহসী কর্মসূচি পালনের জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানান।”
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (সচিব পদমর্যাদা) বলেন, “আমরা অডিটোরিয়াম থেকে বের হয়ে স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছাকাছি অধিক সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণে এ ধরণের কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আগামীতে সকল জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে উৎসব এবং অনুষ্ঠান আয়োজন করতে আমরা বদ্ধ পরিকর থাকবো।” তিনি হাজার হাজার দর্শক সমাগম হওয়ায় আয়োজন সফল হয়েছে মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন।
‘জ্যাত্’ হচ্ছে মারমাদের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতি। জ্যাত্ এর মাধ্যমে মারমাদের আদি ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়। আদিকালের রাজ-রাজাদের জীবনধারা এবং ঐ সময়ের সাধারণ মানুষের জীবনধারা কৃষ্টি কালচার ও কর্মক্ষেত্র সমূহকে সুরে, তালে, লয়ের মাধ্যমে কোনো এক কাহিনীকে ফুটিয়ে তোলাই হলো জ্যাত্। মূলত মারমা তথা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বা সামাজিক অনুষ্ঠানে উৎসবমুখর পরিবেশে আগত অতিথিদেরকে আনন্দ প্রদানের জন্য এ জ্যাত্ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়ে থাকে।