Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪

মহাপরিচালক

ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ (জ. ১৯৫৫) প্রধানত বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশীয় থিয়েটারের সাথে নৃবিজ্ঞান, জনসংস্কৃতি, রাজনীতি ও অন্যান্য জ্ঞানকাণ্ডের অভিন্ন ক্ষেত্রগুলোতে বিচরণশীল একজন তাত্ত্বিক, গবেষক, বক্তা ও তৎপর কর্মী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিসজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং ‘স্পর্ধা: ইন্ডিপেন্ডেন্ট থিয়েটার কালেকটিভ’-এর একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। সৈয়দ জামিল আহমেদ নয়া দিল্লী (ভারত)-এ অবস্থিত ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা’ থেকে গ্রাজুয়েশন (১৯৭৮) এবং ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয় (ইউকে) থেকে এমএ ডিগ্রি (১৯৮৯) অর্জন করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি (১৯৯৭) লাভ করেন।

সৈয়দ জামিলের Acinpakhi Infinity: Indigenous Theatre of Bangladesh (2000) গ্রন্থটি এদেশের হাজার বছরের পরম্পরাভিত্তিক নাট্য ও পরিবেশনা সংক্রান্ত ক্ষেত্রসমীক্ষাভিত্তিক জ্ঞানের প্রথম উল্লেখযোগ্য প্রামাণিক দলিলরূপে নাট্যকর্মী ও বিদ্বৎত্মহলে সমাদৃত।  তাছাড়া, তাঁর লেখা হাজার বছরবাংলাদেশের নাটক ও নাট্যকলা (১৯৯৫), In Praise of Niranjan: Islam Theatre and Bangladesh (২০০১), তৃতীয় বিশ্বের বিকল্প নাট্যধারাউন্নয়ন নাট্যতত্ত্ব ও প্রয়োগ (২০০১), Reading Against the Orientalist Grain: Performance and Politics Entwined with a Buddhist Strain (2008) এবং Applied Theatricks: Essays in Refusal (2013)প্রভৃতি পুস্তক নয়া নয়া দৃষ্টিকোণ থেকে থিয়েটারের ইতিহাস তত্ত্ব ও চর্চার সাথে সমাজ রাজনীতি ও জীবনের নানা দিগন্তের অন্যতর উন্মোচন ঘটায়।

তাঁর প্রকাশিতব্য বইগুলো হলো Memory of Indigo Rebellion: Retained, Erased, Transmuted, The Hidden Life of Bangladesh Theatre: Teeming and Perpetually in Motion এবং সারাহ কেইন রচিত 4.48 Psychosis নাটকের অনুবাদ ও সৃজন-প্রক্রিয়া বিষয়ক সম্পাদিত সংকলন। এছাড়াও তিনি নাট্যকলা, প্রায়োগিক নাট্যকলা, লোক সংস্কৃতি ও কালচারাল স্টাডিজ বিষয়ের উপর বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় আনুমানিক ৭০টি একাডেমিক প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তাঁর কিছু প্রবন্ধ ফরাসী, নরওয়েজিও, রুশ, চীনা, কোরিও ও হিন্দি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। শিক্ষাদান, সেমিনার ও নাট্যসম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং নাট্য প্রয়োজনার উদ্দেশ্যে তিনি উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া মহাদেশ ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করেছেন।  

সৈয়দ জামিল নাট্যশিল্পের একজন সিনোগ্রাফার ও পরিচালক হিসেবে দেশে-বিদেশে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেছেন। চিন্তা ও চর্চার সংশ্লেষে প্র্যাক্সিসে আস্থাবান এই পরিচালক-সিনোগ্রাফার সেলিম আল দীনের চাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৯৯০) ও বাংলাদেশের ঢাকায় (১৯৯১) এবং পরবর্তিতে ভারতের নয়া দিল্লিতে (২০০৬) নির্দেশনা দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় নাট্যাঙ্গিক নির্মাণের একজন অন্যতম প্রবক্তা ও কারিগর হয়ে উঠেন।

                            “চাকা”, নতুন দিল্লি, ভারত           

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা প্রসূত চেতনাকে তিনি সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদী ও উত্তর-ঔপনিবেশিক আত্মপরিচয়বাহী নাট্যচর্চায় অত্যন্ত সৃজনশীলতায় সেই সময় বাস্তব রূপ দিতে সক্ষম হন।

"এক হাজার অওর এক থি রাতে” করাচী, পাকিস্তান   “বেহুলার ভাসান”, ঢাকা, বাংলাদেশ

সৈয়দ জামিল মীর মশাররফ হোসেন রচিত বিষাদ সিন্ধু (১৯৯১ ও ১৯৯২: বাংলাদেশ), আরব্য রজনীর গল্প অবলম্বনে এক হাজার অউর এক থি রাতে (১৯৯৮: পাকিস্তান), মনসামঙ্গল অবলম্বনে বেহুলার ভাসান (২০০৪, ২০০৫ ও ২০১০: বাংলাদেশ), শেকসপিয়ার রচিত ম্যাকবেথ (২০১০: ভারত), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত শ্যামা অবলম্বনে শ্যামার উড়াল (২০১২: ভারত), অভিষেক মজুমদার রচিত রিজওয়ান (২০১৭: বাংলাদেশ),শহীদুল জহির রচিত জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা (২০১৯: বাংলাদেশ) সারাহ কেইন রচিত .৪৮ সাইকোসিস-এর বঙ্গানুবাদ .৪৮ মন্ত্রাস (২০২০: বাংলাদেশ), ডানকান ম্যাকমিলান রচিত এভরি ব্রিলিয়ান্ট থিং-এর বঙ্গানুবাদ বিস্ময়কর সবকিছু (২০২১: বাংলাদেশ) এবং নীলিমা ইব্রাহিম রচিত আমি বীরাঙ্গনা বলছি (২০২৩: বাংলাদেশ)প্রভৃতি প্রযোজনা দেশে-বিদেশে নির্মাণের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী নাট্যতত্ত্ব থেকে প্রস্থান করে জাতীয়তাবাদ-উত্তর নাট্য-নন্দনতত্ত্বের একজন অনুশীলনকারী হয়ে উঠেন। 

  “ম্যাকবেথ”, নতুন দিল্লি, ভারত   “জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা”, ঢাকা, বাংলাদেশ    “৪.৪৮ মন্ত্রাস”, ঢাকা, বাংলাদেশ

এইসব নাট্যের নির্দেশনা এবং প্রায় আশিটি প্রযোজনার ডিজাইনের মাধ্যমে তিনি টেক্সট ও স্পেসের সৌন্দর্যমণ্ডিত এক অচ্ছেদ্য সম্পর্ক, এর রাজনৈতিক তাৎপর্য ও আধ্যাত্মিক অরূপময়তার নিজস্ব নাট্য-বাগ্‌বিধি উদ্ভাবনের স্বকীয়তায় ব্যতিক্রমধর্মী। তাঁর স্বকীয় সৃজন-কুশলতায় ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যের বাগবিধি ও দেশজ সাংস্কৃতিক প্রত্নরূপগুলো সংবেদনশীল মিশেলে এক নয়া নাট্য-দৃশ্য-রূপক হয়ে ওঠে। তাঁর শিল্পভাষা বহুরৈখিক কথন-কৌশলে এক অভিনব ‘পোস্ট-ড্রামাটিক’ নন্দন-রূপ গড়ে তোলে।