Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

মেহনতি জনতার আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ শীর্ষক কর্মসূচি


প্রকাশন তারিখ : 2024-12-10

মেহনতি জনতার আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ শীর্ষক কর্মসূচি

 

আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সময়কাল:

কর্মসূচিটি ডিসেম্বর ২০২৪ (প্রয়োজনে সময় বর্ধিত করা যেতে পারে)। মোট সময়কাল হবে ০১ মাস।

আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটির বাস্তবায়ন এলাকা:

ঢাকা এবং তার পার্শ্ববর্তী ০৫টি শিল্পাঞ্চলে প্রাথমিকভাবে মেহনতি জনতার আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি পরিচালিত হবে। একেকটি এলাকায় সর্বোচ্চ ১৫জন প্রশিক্ষণার্থী নিয়ে ৩দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণটি পরিচালিত হবে।

আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটির ভাবনা:

পুঁজিবাদী সমাজে শাসক টিকে থাকে শোষণ করে। এই শোষকের মধ্যে সবচেয়ে নিগৃহীত শ্রেণী শ্রমিক শ্রেণী। যাদের হাড় ভাঙ্গা খাটুনিতে ক্ষেতে ফসল ফলে। যাদের তাগদে মেশিন চলে। যারা চাকা না ঘুরালে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। অথচ তারা ন্যায্য হিস্যার দাবিতে রাস্তায় থাকে সারা বছর। লড়াই করে, জীবন দেয়। কিন্তু হিস্যা বেহাত হয়ে যায় সরকারি খাতায়, রাজনৈতিক দলের মাইকে, নয়তো বেসরকারি প্রকল্পে।

দিন ঘুরে বছর যায়, বছর গড়ায় যুগে, যুগ গড়ায় শতাব্দীতে। কথার বুনন বক্তৃতায় হারিয়ে যায়। কিন্তু মেহনতি মানুষের জীবনের কোনো পরিবর্তন আসেনা। ধনীরা আরো ধনী হয়, গরীবরা গরীবই থেকে যায়। শ্রমিক শ্রেণীর জোটবদ্ধ নের্তৃত্বে যেদিন বিপ্লব হবে, বৈষম্যহীন একটা সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে সেদিনই তাদের মালিক-মজুর সম্পর্কের দাসত্ব ঘুচবে, মুক্তি আসবে। সেরকম সমাজ ব্যবস্থার  স্বাদ পেয়েছিলেন পৃথিবীর অন্য প্রান্তের শ্রমিকরা।

বাংলাদেশের ইতিহাসে দাবি আদায়ের সংগ্রামে, মুক্তির যুদ্ধে, গণ-অভুত্থানে মজলুমের অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব হয়নি কোনো বিজয়। কিন্তু গৈরবের গাথায় তাদের নাম আসে শুধু সংখ্যায়। নিহত এবং আহতদের তালিকায়।

সম্প্রতিকালে গণ-অভুত্থানে ছাত্রদের দাবিদাওয়া একদফায় রূপান্তর করে জনতা। এই জনতার বৃহৎ অংশই  ছিল শ্রমজীবী। পুরো আন্দোলনে ছাত্রদের পাশে থেকেছেন, লড়াই করেছেন, জীবন দিয়েছেন। কিন্তু তাদের কথা উপেক্ষিত, এমনকি সমবেদনায়ও। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তাদের কোনো প্রতিনিধি নেই। রাষ্ট্রীয় সংস্কারে তাদের কোনো

ভূমিকায় রাখা হয়নি। যারা সমাজের মূল চালিকা শক্তি, যাদের আছে নিবিড় পর্যায়ের বাস্তব জ্ঞান। তাদের বিচ্ছিন্ন রেখে কোনো সংস্কার বা অগ্রগতি সম্ভব নয়।

বিগত রেজিমে গণমাধ্যম জনগণের পক্ষে নিষ্ক্রিয় ছিল। নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে নব্বই শতাংশের বেশি সংবাদ সংস্থাগুলো সরকারের মুখপত্র কাজ করেছে। গণ অভ্যুথানের উত্তাল দিনগুলোতে সরকারের দমন-পীড়ন ধামাচাপা দিতে তৎকালীন সরকার ইন্টানেটে বন্ধ করে দিয়েছিলো। ওই পরিস্থিতিতে আমাদের বিস্মিত করে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলো সিটিজেন সাংবাদিকতা। তথ্য দিয়ে আন্দোলনের পুরো স্পিরিটটা ধরে রেখেছিলো। এই সিটিজেন সাংবাদিকদের বড়ো একটা অংশে ছিলেন শ্রমিক শ্রেণী। জীবন বাজি রেখে তার বিগত শাসকদের অত্যাচারের ভয়বহতা মোবাইলে তুলে সারা বিশ্বকে জানিয়েছিল।

শিল্পের জন্য শিল্প নয় বরং মানুষের জন্য শিল্প হোক। শিল্প হোক অধিকার আদায়ের ভাষা। অধিকার বঞ্চিত মানুষদের নিনাদ নীতিনির্ধারকদের কান পর্যন্ত পৌঁছায়না। তৈরী হবার জন্য, কথা বলার মাধ্যমগুলোতে তাদের দক্ষ করে তোলা প্রয়োজন। যার মধ্যে দিয়ে তারা তাদের নিজেদের  ভাষা তৈরী করবে, কথা বলবে। বাস্তব চিত্র তুলে ধরবে।

 

আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:

ঢাকা ও পার্শবর্তী অঞ্চলের বিভিন্ন পেশার শ্রমিকদের ৩ দিনের আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ।

১. এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য শ্রমজীবী মানুষদের ফটোগ্রাফির মতো শক্তিশালী মাধ্যম সম্পর্কে দক্ষতা বাড়বে।

২. সাধারণত বাইরের থেকে আলোকচিত্রীরা গিয়ে শ্রমিকদের জীবনের গল্প বলে। আলোকচিত্রের গুরুত্ব এবং এ বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা পাবার পর তাদের দিয়েই তাদের সংগ্রামী জীবনের গল্প শোনা। 

৩. এ বিষয়ে আগ্রহী শ্রমিকদের পরবর্তীতে অ্যাডভান্সড লেভেলে প্রশিক্ষণ দেয়া। প্রশিক্ষকরা  পরবর্তীতে তাদের কমিউনিটির শ্রমিকদের এবং আগ্রহী যে কাউকে আলোকচিত্র বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন।

৪. যে অঞ্চলগুলোতে প্রশিক্ষণ দেয়া  হবে সেখানকার প্রশিক্ষণার্থী শ্রমিকদের তোলা ছবি দিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা।

 

আলোকচিত্র কর্মসূচিটির বাস্তবায়ন:

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক উক্ত কর্মসূচিটির পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ০১জন মুখ্য প্রশিক্ষক, ০১জন সহ প্রশিক্ষক, ০১জন সহকারী প্রশিক্ষক সমন্বয়ে একটি দল গঠন করে মেহনতি জনতার আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।