জমজমাট আয়োজনে চলছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’
চতুর্থ দিনে পরিবেশিত হলো যাত্রাপালা ‘লালন ফকির’
গ্রামীণ উৎসবের প্রাণচাঞ্চল্যতায় ফিরেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। গ্রামীণ মেলার মতই বসেছে মিষ্টির দোকান, নাগরদোলাসহ শৈশবের স্মৃতি মাখা নানান পণ্যের পসরা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ৭ দিনব্যাপী যাত্রা উৎসবকে কেন্দ্র জমজমাট হয়ে ওঠেছে সোহরাওয়ার্দীর মুক্তমঞ্চ এলাকা। নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের ব্যবস্থাপনায় আজ ৪র্থ দিনের আয়োজনে পরিবেশিত হয়েছে যাত্রাপালা ‘লালন ফকির’। যাত্রাদল নর নারায়ণ অপেরা’র পালায় নির্দেশনা দিয়েছেন ব্রজেন কুমার বিশ্বাস এবং পালাকার ছিলেন দেবন্দ্রনাথ।
লালন সাঁইজির জীবন ও কর্মের উপর পরিবেশিত যাত্রাপালা “লালন ফকির”।
পরবর্তী যাত্রাপালা:
৫-১১- ২০২৪
যাত্রাপালা- ‘আপন দুলাল’
আগামিকাল মঙ্গলবার পরিবেশিত হবে যাত্রাপালা ‘আপন দুলাল’। দলের নাম-বন্ধু অপেরা, পালাকার- শামসুল হক, পালা নির্দেশক- মনির হোসেন।
যাত্রাপালা ‘আপন দুলাল’ এর কাহিনী সংক্ষেপ:
আপন এবং দুলাল ধর্মপুরের মহারাজ ধনপতি রায় এর দুটি সন্তান। হাশি-খুশি ও সুখ-শান্তির মধ্য দিয়ে বেশ ভালোভাবেই চলছে রাজ্য। হঠাৎ একদিন মহারাণী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি ৩টি প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ করলেন সেনাপতি এবং মহারাজকে। তিনটি প্রতিজ্ঞার মুল কথা রানীর মৃত্যুর পর মহারাজ কখনো বিয়ে করতে পারবেন না। একথা বলে মহারাণী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। মৃত্যুর পূর্বে আপন ও দুলালকে তুলে দিলেন সেনাপতির হাতে। সেনাপতি ছিলেন মুসলিম এবং মন্ত্রী জংবাহাদুর হিন্দু। তার হাতে কেন দিলেন না, সেই প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে মন্ত্রী মহাশয়। সেনাপতি মহারানীর কথা রাখতে গিয়ে আপন ও দুলালকে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে শিক্ষাগুরুর বাড়িতে রেখে আসেন। কিন্তু দিন অতিবাহিত না হতেই চক্রান্ত করে মহারাজকে দ্বিতীয় বিয়ে করান। প্রাসাদে এলেন ‘সৎ মা’। একদিন মহারাজ বললেন, গুরুদেবের বাড়ী হতে আপন এবং দুলালকে প্রাসাদে নিয়ে আসতে।
মহারাজ হঠাৎ শিকারে বের হবেন। কারণ ছোট রানী হরিণের মাংস খেতে চেয়েছিলেন। আপন ও দুলাল শিকারে গেল। ফেরার পথে দুলালের জল পিপাসা পেল। আপন মায়ের কাছে জল আনতে গেলে রাণী ক্ষুদ্ধ হয়ে যান। মন্ত্রীকে ডেকে পরামর্শ করে আপন ও দুলালকে মিথ্যে অপরাধ দিয়ে ঘাতকের হাতে তুলে দিলেন। মহারাজ পুত্র শোকে তখন উন্মাদ। সেনাপতি ও মাস্টার আপন এবং দুলালকে অন্য রাজ্যে পাঠিয়ে দেয়। তারপর পথে যেতে যেতে দুই ভাই দুই দিকে হারিয়ে যায়। অনেক দিন পরে সোনাপুর নামে এক রাজ্যে আপন ও দুলাল একত্রিত হয়। ধনপতি মিরকাসেম এবং মাস্টার সবাই একসঙ্গে রাজ্যে ফিরে এসে তাহাদের রাজ্য উদ্ধার করেন।
৬-১১- ২০২৪, বুধবার
যাত্রাপালা- “ফুলন দেবী”
দলের নাম-শারমিন অপেরা, পালাকার-পুর্নেন্দু রায়, পালা নির্দেশক- শেখ রফিকুল।
৭-১১-২০২৪, বৃহস্পতিবার
যাত্রাপালা- “নবাব সিরাজউদ্দৌলা”
দলের নাম-যাত্রাবন্ধু অপেরা, পালাকার- শ্রী শচীননাথ সেন, পালা নির্দেশক- আবুল হাশেম।
‘‘যদি তুমি ভয় পাও, তবে তুমি শেষ যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ” প্রতিপাদ্যে উৎসব চলবে ৭ নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত। যাত্রাশিল্প ও যাত্রাশিল্পীদের উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে এই উৎসবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিবন্ধিত ০৭টি যাত্রা দল প্রতিদিন ১টি করে ‘ঐতিহাসিক ও সামাজিক’ ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত যাত্রাপালা পরিবেশন করবে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬.০০টা থেকে রাত ৯.০০টা পর্যন্ত পালা পরিবেশিত হবে।