পর্দা নামলো ৬ষ্ঠ জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী ২০২৪-এর
“আমরা আশা করব আপনাদের থেকে, আপনাদের কৃতকর্ম থেকে আমরা সবাই অনুপ্রাণিত হবো। আমাদের নাট্যজন যারা আছেন তারা অনুপ্রাণিত হবেন, যারা পেইন্টিং করেন তারা অনুপ্রাণিত হবেন। এর সাথে যদি আমরা কোনো মেলবন্ধন তৈরি করতে পারি সকল শিল্পকর্মের, বিশেষ করে গান, নৃত্য এবং আবৃত্তির তারাও অনুপ্রাণিত হবেন। সকলে মিলে আমরা আরও ভিন্নরকম চর্চার ভেতর থেকে নতুন যে বাংলাদেশকে খুঁজছি সেটা খুঁজে পাবো বা পথটা দেখাতে পারবো।”
- ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ, মহাপরিচালক (সচিব পদমর্যাদা), বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি
শেষ হলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে মাসব্যাপী ৬ষ্ঠ জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীর। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের আয়োজনে গত ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ৬ষ্ঠ জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। পরবর্তীতে আরও ৭ দিন প্রদর্শনীর সময় বৃদ্ধি করা হয়। আজ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার বিকাল ৫:০০ টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (সচিব পদমর্যাদা) ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। প্রদর্শনীর শিল্পকর্ম বিষয়ে পর্যালোচনা করেন বরেণ্য শিল্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অনারারি প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার। আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি প্রফেসর নাজমা খান মজলিস। বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক শিল্পী আব্দুল হালিম চঞ্চল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (সচিব পদমর্যাদা) ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ চারু শিল্পীদের বলেন, “আমরা আশা করব আপনাদের কৃতকর্ম থেকে আমরা সবাই অনুপ্রাণিত হবো। আমাদের নাট্যজন যারা আছেন তারা অনুপ্রাণিত হবেন, যারা পেইন্টিং করেন তারা অনুপ্রাণিত হবেন। এর সাথে যদি আমরা কোনো মেলবন্ধন তৈরি করতে পারি সকল শিল্পকর্মের, বিশেষ করে গান, নৃত্য এবং আবৃত্তির তারাও অনুপ্রাণিত হবেন। সকলে মিলে আমরা আরও ভিন্নরকম চর্চার ভেতর থেকে নতুন যে বাংলাদেশকে খুঁজছি সেটা খুঁজে পাবো বা পথটা দেখাতে পারবো।”
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম সম্পর্কে মহাপরিচালক বলেন, “প্রত্যেক বিভাগ তার নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়ে নিজস্ব চিন্তাগুণেই কাজ করছে। সেখানে মহাপরিচালকের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। প্রত্যেকটা বিভাগের প্ল্যান করেছি আমরা। দুইমাস অনেক আলোচনা করে, অনেক কাটছাট করে আমরা একাডেমি কার্যক্রমের পরিকল্পনা করেছি। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে পরিকল্পনা করেছি এবং ডিসেম্বর থেকে আমরা ব্যাপকভাবে কাজে নেমেছি। আমরা আরও বেশি কাজ করতে চাই।”
আগামীতে আরো বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহনের বিষয়ে তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারি মাসে ৮৯টি অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এটা ‘বহু ভাষার উৎসব’ নামে আমরা উদযাপন করতে যাচ্ছি। সেখানে আমাদের আদিবাসী যারা আছেন, আমাদের ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর যারা আছেন তাদেরকে আমরা যেমন উদযাপন করব। আমাদের মাতৃভাষা বাংলা ভাষা-ভাষী যারা আছেন তাদেরকেও আমরা উদযাপন করব। এই বহুমাত্রিক, বহুভাষিক উদযাপনের ভেতর থেকে আমরা বাংলাদেশকে দেখতে চাই। আশা করি আপনারা সকলে যুক্ত হবেন।”
আলোচনা পর্ব শেষে ৬ষ্ঠ জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী ১৫৯ জন শিল্পীর হাতে সনদপত্র তুলে দেয়া হয়।
ধারাবাহিকভাবে ভাস্কর্য চর্চায় উৎসাহ ও বিকাশ সাধনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে ১৯৮২ সালে প্রথম ভাস্কর্য প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। এ বছর ৬ষ্ঠ বারের মতো আয়োজন করা হয়েছে মাসব্যাপী জাতীয় পর্যায়ের এ ভাস্কর্য প্রদর্শনী। এবারের প্রদর্শনীতে ১৫৯ জন শিল্পীর বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১৭৮ টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। এ বছর ১০ সম্মানসূচকসহ মোট ১৩ টি পুরস্কার প্রদান করা হয়।