সাপ্তাহিক বাহাস সিরিজ
‘নতুন বাংলাদেশ : পথ কোথায়?’
“সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব পথ, সব মত, সব রাজনীতি এখানে আসতে পারে এবং কথা বলতে পারে- কেন তাদের পথ/ তাদের চিন্তা যুক্তিযুক্ত? যা গত ১৫ বছরে হয়নি তাহলেই আমরা সার্থক হবো এবং আমরা মনে করি এই চিন্তার একটা কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে শিল্পকলা একাডেমি।” ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সাপ্তাহিক বাহাস সিরিজ ‘নতুন বাংলাদেশ : পথ কোথায়?’ এর প্রথম পর্ব। আজ জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে এ আয়োজন। এতে আলোচক হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহিদুল হক; নিউ এইজ সংবাদপত্রের সাব এডিটর আবু ইসমাইল মোহাম্মদ দানিয়েল; জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র ও মুসলিম নারী ভাস্কর সামান্থা শারমিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জুলাই রেজুলেশনারী এলায়েন্স এর মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদ; রসিক এর সম্পাদক ভূইয়াঁ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এবং কবি, গবেষক ও আলেম মুসা আল হাফিজ। বাহাস সিরিজ সঞ্চালনা করেন লেখক ও ফিল্মমেকার এবাদুর রহমান।
গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠানের শুরুতেই বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। সাপ্তাহিক বাহাস সিরিজ আয়োজন বিষয়ে তিনি বলেন, “আগস্টের ৬ তারিখে ঢাকা শহরের রাস্তায় যে প্রাণ স্পন্দন ছিলো সেটা এখন নেই। এটা খুব পরিস্কার। বিভিন্ন কারণে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যেখানে আমরা শান্তভাবে, চিন্তাগুলো পরিস্কার করার জায়গাটা বোধ হয় পাচ্ছি না। শিল্পকলা একাডেমির ভুমিকা কখনোই এটা না যে কী করা দরকার তা বলে দেয়া। আমাদের ভুমিকা হলো এখানে একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, একটা ফোরাম তৈরী করা- যেখানে সবাই আলোচনা করবে, কথা বলবে, তর্ক করবে।”
মহাপরিচালক আরো বলেন, “আমি বিশ্বাস করি জনগণের বুদ্ধি আছে। আমরা এমন বুদ্ধিজীবী নই যে, আমরা নির্ণয় করে দেব যে মানুষ কোন পথে যাবে। আমরা আমাদের কথাগুলো বলব, লাইভ স্ট্রীম হবে, আপনারা যা আলোচনা করবেন সব আর্কাইভ করব, রেকর্ড করব। মানুষ জানবে আপনারা কী বলছেন। ভেতর থেকেই মানুষ যা চায়, জনগণ যা চায় সে পথেই বাংলাদেশ আগাবে”।
নাট্যকার ও শিক্ষক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের জন্য নির্ণয় করার আমি কেউ না, আপনি কেউ না, আমরা কেউ এককভাবে কেউ না। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। এজন্য আমরা শুরুও করছি আপনাদের, তরুণদের নতুন চিন্তা ভাবনা নিয়ে। আমরা সর্ব শ্রেণির, সর্বজায়গায়, সর্বমত, সর্বধর্ম, সর্বপথ সবকিছুর এখানে সম্মিলন দেখতে চাই এবং কথা শুনতে চাই। কাজেই সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব পথ, সব মত, সব রাজনীতি যদি এখানে আসতে পারে, কথা বলতে পারে। কেন তাদের পথ, তাদের চিন্তাটা যুক্তিযুক্ত? যা গত ১৫ বছরে হয়নি, তাহলেই আমরা সার্থক হবো। আমরা মনে করি এই চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু যদি হয়ে যায় শিল্পকলা একাডেমি।”
“প্রতি সপ্তাহে যদি একবার করে নিজেদের প্রশ্নগুলো ওঠে এবং এটা যদি মানুষের ভেতরে চিন্তার স্ফুরং ঘটায়, নতুন চিন্তা জাগ্রত করে তাহলেই আমরা স্বার্থক। আমরা নতুন চিন্তার বীজ বপন করতে চাই মানুষের মনে, বাকীটা আপনাদের হাতে।” বলেও যুক্ত করেন তিনি।
চর্যাপদ নির্দিষ্ট গহণগম্ভীরা এই বাংলার ভবনদী, বহুমত, বহুপথ, মীমাংসা ও মিথস্ক্রিয়া, প্রশ্ন-প্রতিপ্রশ্ন-সম্পূরক প্রশ্ন ও ক্রিটিক্যাল ভাবনা ও কর্ম উদ্যোগের এলান নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রকাশনা ও গবেষণা বিভাগের আয়োজনে প্রতি বৃস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে সাপ্তাহিক বাহাস।