হাজং সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চরমাগা উদযাপন উপলক্ষে
নেত্রকোণার দূর্গাপুরের বগাউড়ায় ‘মহিষাসুর বধ পালা’ মঞ্চায়ন
আবহমানকালের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ইতিহাসের তীর্থস্থান আমাদের এই বাংলাদেশ। সমতল এবং আধিবাসীদের নিজ নিজ জীবনধারা এবং বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞ এদেশের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধশালী করেছে। সমৃদ্ধ এই সংস্কৃতিকে দেশব্যাপী পরিচিত এবং প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেল এর ব্যবস্থাপনায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার ১নং কুল্লাগড়া ইউনিয়ন-এর বগাউড়ার আড়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, শনিবার বেলা ২.৩০ টায় হাজং সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চরমাগা উদযাপন উপলক্ষে ‘মহিষাসুর বধ পালা’ মঞ্চায়ন হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (সচিব পদমর্যাদা) ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কালচারাল একাডেমি, বিরিশিরি, নেত্রকোণা-এর পরিচালক গীতিকবি সুজন হাজং; চিত্রশিল্পী ও গাঁওমোড়ল বিশ্বজিং হাজং রুপক, কবি ও গাঁওমোড়ল হরিদাস হাজং প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের উপপরিচালক এস এম শামীম আকতার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশে যেমন হাজার নদী আছে, ঠিক তেমনি হাজার মত, পথ, ধর্ম, বর্ণ, জাতিগোষ্ঠীর সম্মিলিত রূপ, আমরা সবাই মিলে একসাথে বাংলাদেশী। আমাদের জাতিসত্ত্বা আলাদা হতে পারে, কিন্তু আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশকে ভালোবেসে বাংলাদেশের জন্য কাজ করি। ক্ষুদ্র শব্দটা অবশ্যই পরিত্যাজ্য, তার বদলে আমরা জাতিসত্ত্বা শব্দটা ব্যবহার করতে চাই এবং বলতে চাই এখানে সবার সমান অধিকার আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘দেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিকশিত করার লক্ষ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে সেগুলো রক্ষার জন্য কাজ করছে শিল্পকলা একাডেমি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসে আমাদের দেশজ যে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, নাট্যরীতি বা গান মানুষের নিকট উপস্থাপন করে আমরা বলতে চাইব যে আমরা তাদেরই একজন।’
সন্ধ্যায় হাজং সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চরমাগা উৎসবে বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির শিল্পীবৃন্দ নৃত্য পরিবেশন করেন। এরপর বগাউড়া গ্রামের হাজং সাংস্কৃতিক দল ঐতিহাসিক ‘মহিষাসুর বধ পালা’ মঞ্চায়ন করেন।